দিন বদলেছে মানুষের আদব-কায়দা,
চিন্তা-ভাবনার অনেক পরিবর্তন এসেছে। সবাই এখন যথেষ্ট সচেতন ও অ্যাডভান্স। টেকনলজির
সাথে আমরাও এখন স্মার্ট ও আরও স্মার্ট হয়ে চলেছি। মোটিভ ছাড়া কোন কাজকে এখন কাজ
বলা হয় না। কিন্তু তবু এতো প্রগতি সত্বেও কেন সমস্যার সীমা পরিসীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
মুক্ত আকাশের নীচে বেঁচে থাকা আমরা কবে ভুলেই গেছি। শৈশত্ব, নারীত্ব কোথাই যেন সব
হাড়িয়ে যেতে বসেছে। যেন এই সবের আর দরকারই নাই। সবাই এক ক্যাটেগুরিতে বাঁধতে
বসেছি। আমাদের জীবন এখন টেকনলজি নির্ভর, এক পরাধীনতার স্বাদে আস্বাদিত। বুদ্ধির
সীমা যতো বাড়ে ভাবনার পরিসর ততো কমতে শুরু করে। তাই হয়েছে আমাদের। যেমন – স্বল্প লগ্নে
অধিক লাভ করার অক্লান্ত চেষ্টা, স্বল্প পরিশ্রমে অধিক সুফল পাওয়ার আশায় আমরা
অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। তাই হার্ড ওয়ার্ক ছেড়ে এখন স্মার্ট ওয়ার্কের রমরমা। প্রশ্ন উঠে
আজ মানুষ এতো সচেতন হওয়া সত্বেও কেন এতো রোগ যন্ত্রণায় ভুক্তভুগি ? কলেস্ট্রল,
ডায়েট ইত্যাদি শব্দগুলি এখন মানুষের মুখস্থপ্রায় অথচ মেদ, ভুঁড়ি, থাইরয়েড, জয়েন্ট
পেইন এখন ঘরে ঘরে। আসলে আমাদের সাথে আমাদের রোগগুলোও স্মার্ট হতে শুরু করেছে।
কিন্তু এমন কেন হচ্ছে ? আপনার ভাবনাটাকে একটু বড় করে দেখুন ব্যাপারটা পরিষ্কার
বুঝতে পারবেন। আমরা প্রায় ভুলেই গেছি সেই আপ্ত বাক্যটিকে
' সাধা জীবন উচ্চ বিচার 'আমাদের জীবন ও বিচার দুটোই যেন আজ নগ্ন অবস্থা লাভ করেছে। অধিক মুনাফাধারিদের কাছে থেকে আমরা ভেজাল ভরা দ্রব্যাদি কিনে জীবন ধারণ করছি। ফলে যা পরিণাম হওয়ার তা তো হচ্ছেই কিন্তু এতে কার লাভ বা মঙ্গল হচ্ছে কেও জানে না। যারা এমন কাজ করছে তারা অধিক লাভ মুনাফা নিয়ে কি চির সুখি হতে পেরেছে ? না, এখন পর্যন্ত এমন খবর পাওয়া যায়নি যে কারও পেট একেবারে ভরে গেছে আর খিদা-তৃষ্ণা পায়না আর কোন রোগ যন্ত্রণা নেই। বিচার ভাবনা কমলে এমনই হয়। প্রথমে আমি মুনাফা কামাবো তারপর আমার কাছে থেকে অন্যে সেই মুনাফা কামাবে। তবে থাকলো কি ? কিছুই না। শূন্য হাতে এসেছিলাম শূন্য হাতেই যেতে হবে। প্রশ্ন উঠবে তবে এতো বছর থেকে কি দিয়ে গেলেন ? ভাবুন যদি শুনতে হয় শুধু অন্যকে দুঃখ, কষ্ট তবে কেমন লাগবে !! তাই সাধা জীবন থাক কিন্তু বিচার ভাবনা হোক উন্নত। তবেই আসল মুনাফা আসবে। যাতে লাভবান হব আমারা সবাই।