‘Nature itself is the
best physician’ প্রকৃতিই মানুষের প্রথম ও একমাত্র চিকিৎসক।তার থেকে বড় কোন
ডাক্তার হতে পারে না।
সভ্যতার ঊষা লগ্ন থেকে মানুষ রুগী হয়েছে এবং সুস্থ হয়েছে প্রাকৃতিক
উপচারেই। আমরা আধুনিক যে ঔষধ খাই তার বয়স খুব বেশি হলে ১০০ থেকে ১৫০ বছর হতে পারে। সেটা বাদ দিলে মানব
উদ্ভবের চার লক্ষ থেকে আড়াই লক্ষ বছরের ইতিহাসে মানুষ কি ভাবে সুস্থ হয়ে উঠত? এর উত্তর
দিতে কোন প্রমানের দরকার পরে না যে মানুষ প্রাকৃতিক উপাদান গুলিকেই কাজে লাগিয়ে
তার সুস্থ হওয়ার ঔষধ তৈরি করত। যেমন আজকের মেডিকেল সায়েন্স করে। প্রাকৃতিক প্রণালীগুলিকে
দীর্ঘ বছর ধরে জেনে বুঝে গবেষণা করে তাকে নিজের কল্পনার রুপ দিয়ে তৈরি করে
জীবন দায়ী ঔষধ। কিন্তু এই সমস্ত কিছুর মূলে আসলে কে আছে ? - প্রকৃতির সেই অসীম
শক্তি। যার আগে সমস্ত কিছু অসহায় । নিত্য নতুন হাজারও রোগ হতে পারে, জন্মাতে পারে হাজারও
নতুন ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, জীবাণু কিন্তু তাদের নিধন করার প্রণালী প্রকৃতির মধ্যেই
কোথাও লুকান আছে। সমস্যা হাজারও হতে পারে কিন্তু তার সমাধান প্রকৃতিই
কোথাও আগে থেকে তৈরি করে রেখেছে। তাকে শুধু খুঁজে বের করতে হয়। এটাই প্রকৃতির নিয়ম। যবে থেকে মানুষ এই
সত্যতা বুঝতে পেরেছে তবে থেকে আবিষ্কার হয়েছে ঔষধ থেকে শুরু করে সমস্ত প্রয়োজনীয়
জিনিসপাতি। প্রকৃতির থেকে বড় কিছু হতে পারে না, দরকার শুধু আমাদের সমস্যার সমাধান
বা ঔষধটিকে খুঁজে বের করা। এখানে রয়েছে এমন হাজারও প্রাকৃতিক ঔষধ ও তার প্রণালী।
নিমপাতা – নিমের বৈজ্ঞানিক
নাম আজাদিরাচতা ইন্ডিকা। এটি একটি চিরহরিৎ ঔষধ গাছ। এর প্রায় প্রতিটি অংশই পাতা,
কন্ড, শিকড় বহু ধরনের কাজে ব্যবহৃত হয়।
নিমপাতা ত্বকের যেকোনো ধরনের রোগের জন্য ব্যবহার করা অত্যন্ত উপকারী। মাসে
অন্তত একদিন নিমপাতা বেটে লাগালে ত্বকের সমস্ত জীবাণু নাশ হয়। আর প্রতিদিন পুরো
শরীরে লাগালে দেহের বর্ণ যেমন উজ্জ্বল হয় তেমনি কোনরূপ চর্মরোগ হবার সম্ভাবনা থাকে
না।
এছাড়া যে সমস্ত রোগে নিমপাতা ব্যবহৃত হয় তা হল –
১. কফজনিত বিকের ব্যথা – রোজ সকালে খালিপেটে ১ চামচ নিমপাতার রস এবং ১ চামচ
কাঁচা হলুদের রস মিশিয়ে খেলে কফ নাশ করে সাথে রক্ত পরিষ্কারও করে। ১ চামচ নিমপাতার
রস গরম জলের সাথে খেলেও বুকের ব্যথা কমে।
২. কৃমি – ১ চামচ নিমপাতার গুঁড়ো ও ১ চামচ মধু একত্রে মিশিয়ে সকালে খালি
পেটে খেলে ক্রিমিরোগ প্রতিরোধ করে। এটি আমাশা রোগের ক্ষেত্রেও বেশ উপকারী।
৩. উকুন নাশে – নিমপাতা বেটে হালকা করে মাথায় লাগিয়ে ঘণ্টা খানেক পরে মাথা
ধুয়ে ফেলতে হবে। এই ভাবে দুই থেকে তিনদিন করলে মাথার উকুন সম্পূর্ণ নাশ হয়।
৪. অজীর্ণ – এক থেকে দেড় চামুচ নিমপাতার রস অর্ধেক কাপ জলের সঙ্গে মিশিয়ে
সকাল ও বিকাল খেলে অজীর্ণ, অনেক দিন ধরে পেটের অসুখ, পাতলা পায়খানা ভালো হয়।
৫. পোকা-মাকড় কামড়ালে - পকা-মাকড় কামড়ালে বা হুল ফোটালে নিমের মুলের ছাল বা
পাতা বেটে সেই জায়গায় লাগালে ব্যথা কমে যায়।
৬. দাঁতের রোগে - নিমের দাঁতন দিয়ে
নিয়মিত দাঁত মাজলে দাঁতের কোন রোগ হতে পারে না। এটি দাঁতের যে কোন রোগের সবথেকে বড়
ওষুধ।
৭. জন্ম নিয়ন্ত্রন – বৈজ্ঞানিকরা পরীক্ষা করে দেখেছেন যে, নিমতেল একটি
শক্তিশালী শুক্রাণু নাশক হিসাবে কাজ করতে পারে। এটি ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে শুক্রাণু
মেরে ফেলতে সক্ষম। যার দ্বারা মহিলারা গর্ভনিরোধ করতে পারে।
৮. ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রন – রোজ সকালে ১৫ থেকে ২০ টি নিমপাতা চিবিয়ে খেলে
অথবা ৫ থেকে ৬ চামচ নিমপাতার রস খেলে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রনে আসে।