বাবু হয়ে বসে খাওয়ার উপকারীতা
মডার্ন সভ্যতার একটি অন্যতম চল হল চেয়ার টাবিলে বসে খাওয়া। বিদেশিদের হাত
ধরে আমরাও নীচে বসে খাওয়াটা কবে ত্যাগ করে ফেলেছি। জায়গা করেছি ডাইনিং রুমে সুন্দর
সুন্দর চেয়ার টেবিলের। যেখানে বসে সকাল, দুপুর, বিকাল, রাত্রে খাওয়ার গ্রহণ করি। শুধু মডার্ন হওয়ার আশায় প্রাচীন রীতিকে কবে জলাঞ্জলি দিয়েছি। কিন্তু সেই
আশা যে ভঙ্গ হয়েছে তা বিজ্ঞানীদের গবেষণায় প্রমাণিত। মাটিতে বাবু হয়ে বসে খাওয়ার উপকারীতা নাকি অনেক। যেমন –
মাটিতে বা নীচে বসে খেলে নিজে থেকে অনেক আসন হয়ে যায়। সুখাসন, পদ্মাসন,
সিদ্ধাসন ইত্যাদি। এতে থাই, গোড়ালি, হাঁটুর কর্মক্ষমতা বাড়ে। হজম ক্ষমতার অনেক
উন্নতি হয়। যারা গ্যাস, অম্বল, হজমের সমস্যায় ভুগেন তাদের চেয়ার টেবিলে বসে খাওয়া
উচিৎ নয়। দেখা গেছে বাবু হয়ে বসে খেলে ডাইজেস্টিভ জুসের ক্ষরণ বেড়ে যায় ফলে হজম
প্রক্রিয়া খুব সুন্দর হয়। ২০১২ সালে ইউরপিয়া জার্নাল অব প্রিভেন্টিভ কার্ডিওলজি
নামে এক গবেষণাপত্রে প্রকাশিত হয়েছিল যে, ৫১ থেকে ৮০ বছর বয়স্ক কিছু ব্যক্তিদের
উপর গবেষণা চালানোর পর দেখা গেছিল যে যারা কোনও সাপোর্ট ছাড়া মাটিতে বসে থাকতে
থাকতে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেন তাদের শরীরের সচলতা বাড়ার পাশাপাশি একাধিক অঙ্গের
কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি ঘটে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই আয়ু অনেকটাই বেড়ে যায়। আর যারা এমনটা
করতে পারেন না, তাদের আয়ু অনেকটাই কমে আসে। বাবু হয়ে বসে খেলে শরীরের কর্মক্ষমতা
বাড়ার পাশাপাশি বহু ব্যাথা যন্ত্রণার উপশম হয়। এতে আর একটি বিশেষ সুবিধা হল ভেগাস
নার্ভ যা পেটের খবর মস্তিষ্কে পৌছায়। সেটি খুব অ্যাক্টিভ হয়ে যায়। যাতে পেট ভরলেই
খাওয়ার ইচ্ছা কমে আসে। যা আমাদের ওজনকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়,
হার্টের বহু ধরণের রোগ হওয়ার আশঙ্কা কমে আসে, শরীরে বিশুদ্ধ অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের
ছোটাছুটি বেড়ে যায়। একটি গবেষণায় কিছু আজব তথ্য উঠে আসে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা মাটিতে
বসে থাকলে শরীর এবং মস্তিষ্কের ভেতর বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটতে শুরু করে। যার প্রভাবে স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ কমে যায়। ফলে মানসিক অবসাদ তো কমেই সাথে সাথে স্ট্রেসের
মাত্রাও কমতে শুরু করে। তাই কিছু না জেনে বুঝে অন্যের নকল করাটাকে কি মডার্নিটি
বলে ? উত্তর আপনার, স্বাস্থ্যও আপনার।