জীবনে আনন্দ উৎসাহের সাথে বেঁচে
থাকতে পারলে আমাদের অনেক সমস্যা আপনে আপই সমাধান হয়ে যাই। এই কৌশলটা যদি একবার কোন
ভাবে আয়ত্ব করা যায় তবে দৈনন্দিন জীবনে আমাদের অনেক মানসিক চাপ কমে আসবে। আমরা
জীবনকে পূর্ণ উপলব্ধি করতে পারবো।
বিশিষ্ট অস্ট্রেলিয়ান স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ এইচ. সি. উইকস জীবনে আনন্দ
করে বাঁচার জন্য তিনটি মূল সূত্র উৎপাটন করেন।
প্রথামটি হল মেনে নেওয়া বা অ্যাক্সেপ্ট - যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হলে আমাদের প্রথম কাজ হল বাস্তব সত্যটাকে মেনে নেওয়া। অনিবার্যকে মেনে নেওয়ার ক্ষমতা যার নেই তাকে ভুগতেই হবে বিপুল উদ্বেগ ও মানসিক চাপে। যিনি রোগ যন্ত্রণায় কাতর, যার সামনে বিপুল ক্ষতির সম্ভাবনা, ব্যর্থতা, বিচ্ছেদ, দুঃখ, প্রিয় আত্মিয়ের শোক, যার মৃত্যু আসন্ন তার কাছে এমন বাস্তবতা গ্রহণ করা সত্যি কঠিন কিন্তু সেটাই আমাদের জীবনের আসল পরীক্ষা। ঠিকমতো মেনে নেওয়ার শিক্ষা আমাদের থাকলে প্রতিকূলতাকে জয় করে আনন্দের সাথে বেঁচে থাকা সম্ভব। যদি খুঁজা যায় তবে প্রতিকূলতাকে জয় করার এমন ভূরি ভূরি অনুপ্রেরনাদায়ী উদাহরণের সন্ধান পাওয়া যাবে। আসলে স্থায়ি শোক বলে এখানে কিছু নেই কারণ আমরা এখানে কেও স্থায়ি ভাবে থাকতে আসেনি। সময় ফুরালে সবাইকে সব কিছু ছেড়ে যেতে হবে। কেউ আগে গিয়েছে কাওকে পরে যেতে হবে। যাওয়াটা যখন নিশ্চিত তখন নৈরাশ্য কিসের ? যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়াটা আসল কথা। পশুরা আবার এ ব্যাপারে আমাদের থেকে উন্নত। শিকার হাতছাড়া হলে কোন পশু গালে হাত দিয়ে ভাবতে বসে না, যন্ত্রণা বিদ্ধ হলে কোন পশু বাঁচার আশা ত্যাগ করে না। তারা ব্যর্থতার কথা ভুলে নতুন উদ্যমে আবার শুরু করে শিকারের খোঁজ, চারিদিকে বিপদ থাকা সত্ত্বেও সে নিশ্চিন্তে আবার খাবারের সন্ধানে বেরোয়। এ প্রসঙ্গে আমেরিকান কবি অয়াল্ট হুইটম্যান-এর কিছু পঙক্তি উল্লেখযোগ্য
প্রথামটি হল মেনে নেওয়া বা অ্যাক্সেপ্ট - যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হলে আমাদের প্রথম কাজ হল বাস্তব সত্যটাকে মেনে নেওয়া। অনিবার্যকে মেনে নেওয়ার ক্ষমতা যার নেই তাকে ভুগতেই হবে বিপুল উদ্বেগ ও মানসিক চাপে। যিনি রোগ যন্ত্রণায় কাতর, যার সামনে বিপুল ক্ষতির সম্ভাবনা, ব্যর্থতা, বিচ্ছেদ, দুঃখ, প্রিয় আত্মিয়ের শোক, যার মৃত্যু আসন্ন তার কাছে এমন বাস্তবতা গ্রহণ করা সত্যি কঠিন কিন্তু সেটাই আমাদের জীবনের আসল পরীক্ষা। ঠিকমতো মেনে নেওয়ার শিক্ষা আমাদের থাকলে প্রতিকূলতাকে জয় করে আনন্দের সাথে বেঁচে থাকা সম্ভব। যদি খুঁজা যায় তবে প্রতিকূলতাকে জয় করার এমন ভূরি ভূরি অনুপ্রেরনাদায়ী উদাহরণের সন্ধান পাওয়া যাবে। আসলে স্থায়ি শোক বলে এখানে কিছু নেই কারণ আমরা এখানে কেও স্থায়ি ভাবে থাকতে আসেনি। সময় ফুরালে সবাইকে সব কিছু ছেড়ে যেতে হবে। কেউ আগে গিয়েছে কাওকে পরে যেতে হবে। যাওয়াটা যখন নিশ্চিত তখন নৈরাশ্য কিসের ? যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়াটা আসল কথা। পশুরা আবার এ ব্যাপারে আমাদের থেকে উন্নত। শিকার হাতছাড়া হলে কোন পশু গালে হাত দিয়ে ভাবতে বসে না, যন্ত্রণা বিদ্ধ হলে কোন পশু বাঁচার আশা ত্যাগ করে না। তারা ব্যর্থতার কথা ভুলে নতুন উদ্যমে আবার শুরু করে শিকারের খোঁজ, চারিদিকে বিপদ থাকা সত্ত্বেও সে নিশ্চিন্তে আবার খাবারের সন্ধানে বেরোয়। এ প্রসঙ্গে আমেরিকান কবি অয়াল্ট হুইটম্যান-এর কিছু পঙক্তি উল্লেখযোগ্য
পশু হয়ে যদি বাঁচতে
পারতাম পশুদের মধ্যেই,
তারা কত শান্ত, কত
আবেগ শূন্য,
উদ্বেগে তারা ঘেমে উঠে
না, তারা বিলাপ করে না,
তাদের অবস্থা নিয়ে।
অপ্রতিকূলতা, ব্যর্থতা এইসব বেঁচে থাকারই এক
অঙ্গ। আমাদের উচিত ঔদার্যের সাথে, শোভন সুন্দরভাবে বাস্তবটাকে মেনে নেওয়া। তবে
নিষ্প্রাণ ভাবে নয় আনন্দের সাথে। মেনে নেওয়া এবং মানিয়ে নেওয়ার সদর্থক দৃষ্টিভঙ্গি
মানসিক চাপ থেকে মুক্তির পথে প্রথম সোপান।
দ্বিতীয় সুত্রটি হল ভেসে চলা বা Floating - এর অর্থ হল
আমাদের সদর্থক দৃষ্টি ভঙ্গি। যা পেয়েছি তাতে সন্তুষ্টি থাকা। যেমন দুইটি অর্ধেক জল
পূর্ণ বালতির পাশে দুই জন ব্যক্তি দাঁড়িয়ে আছে। একজন বলছে, আধ বালতি জলে কি হবে আর
অন্যজন বলছে, প্রভু তোমার কৃপায় আধ বালতি জল অন্তত পেয়েছি। এখানে প্রথমজন
নাইরাশ্যবাদী আর দ্বিতীয়জন আশাবাদী। নাইরাশ্যবাদীর মনে কখনই সুখ থাকে না, বিষণ্ণতা
তার সঙ্গী অন্যদিকে আশাবাদী সর্বদা শক্তি আর প্রাণময়তায় ভরপুর। এমন ব্যক্তি যে
কোনও রকম সংঘাতময় পরিস্থিতিতে সামাল দিতে সদাই প্রস্তুত।
তৃতীয় সূত্রটি হল সময় - জীবনের গতি নির্ধারণে সময়ের গতি অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ। সময় আমাদের ধৈর্য ও অধ্যবসায়ের শিক্ষা দেয়। তাই জীবনকে একটা
শৃঙ্খলায় বাঁধতে হবে। বলা হয় – শৃঙ্খলতা হল স্বর্গের প্রথম ফরমান। যার জীবন যতোটা
সাজানোগুছানো তার জীবন অতোটাই সুন্দর। আসলে ব্যস্ত থাকাটা একটি প্রাকৃতিক ঔষধ যা
আমাদের বহু শারীরিক ও মানসিক কষ্টকে লাঘাব করে।
ডাঃ উইক্সের এই
সূত্রগুলি তার দীর্ঘ অভিজ্ঞতার ফসল এবং এ ধরণের চিন্তাগুলি অনেক ধর্মীয় গ্রন্থে ও
সাধু মহাপুরুষদের বানীতেও পাওয়া যায়। এই সূত্রগুলির সাহায্যে আমরা যেন আমাদের
মনটাকে এমন ভাবে তৈরি করতে পারি যাতে আমাদের অন্তঃস্থিত সত্তার সুরে সুর মিলে যায়।
রোগীর অন্তর থেকে উঠে আসা বানীই তার রোগ মুক্তির প্রকৃত দিশারী।